Pages

Friday, January 27, 2017

ক্যানসার চিকিৎসা

স্কুলে পাঠ্যবই থেকে প্রথম জানা: অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজনকে ক্যানসার বলে। সেই নিয়ন্ত্রণ হারানো কোষ বিভাজন ঘটে চলবে ‘তার’ মস্তিষ্কে– এমনটা ঘূণাক্ষরেও ভাবনায় ছিল না। অথচ ২০১৬ সালের ‍জুনে বাংলাদেশিদের গড় আয়ু বেড়ে ৭০ বছর ৯ মাস হওয়ার প্রতিবেদনে যখন উন্নয়নের ‘তৃপ্তি’ প্রকাশিত হয়, ‘তার’ অচেতন আয়ু তখন শেষের দিনগুলো কাটাচ্ছে হাসপাতালে।

মুখ ও গলার ক্যান্সারের কারণ ও প্রতিরোধ

একজন ডাক্তার হিসেবে বলতে পারি আমাদের দেশে ক্যান্সার সম্পর্কে সাধারন মানুষের মধ্যে খুব ভালো একটা ধারণা নেই । বেশিরভাগই জানেন না ক্যান্সার কি, কেন হয়, লক্ষণ কি কি এবং প্রতিকার বা চিকিৎসা কি । সে জন্যই এই লেখা । বাংলাদেশে লিঙ্গ এবং বয়স ভেদে মুখ ও গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই বেশী, তাই আজ মুখ ও গলার ক্যান্সার নিয়েই আলোচনা করবো । এই আলোচনা বিস্তারিত নয়, শুধুমাত্র পয়েন্ট আকারে নাগরিকদের সচেতেনতা বৃ্দ্ধির জন্য।
    মুখ ও গলার ক্যান্সারের স্থান
Cancer  image

 মুখ গহ্বর (ওরাল ক্যাভিটি) গলবিল (ফ্যারিংস)
 কন্ঠনালী (ল্যারিংস)
 নাক (ন্যাসাল ক্যাভিটি)
 নাকের হাড়ের ভিতর বায়ু গহ্বর (প্যারা নাসাল সাইনাস)
 অন্যান্য – লালা গ্রন্থি, থাইরয়েড গ্রন্থি ইত্যাদি।

    মুখ ও গলার ক্যান্সারের কারণ

মুখে গলায় ও মাথায় ক্যান্সারের লক্ষণ

মুখে, গলায় ও মাথায় ক্যান্সার হয়েছে কিনা তা স্ক্রিনিং পরীক্ষার মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়। থাইরয়েড গ্রন্থি এবং গলায় অস্বাভাবিকতা দেখা দিলেকালবিলম্ব না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। তবে হ্যাঁ, একটাবয়সে গলায় অস্বাভাবিকতা দেখা যায়, যেমন- গলার কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হয়, গলায়কোনো ধরনের গোটার জন্ম হয় এবং এসব পরিবর্তনের সময় দুই সপ্তাহের বেশি হলে।পরীক্ষা করা প্রয়োজন হয়।
ধূমপান, তামাক পাতা ও অ্যালকোহল পান ইত্যাদি কারণে মুখে, গলায় ও মাথায় ক্যান্সারের ঝুঁকি দেখা দেয়। এসব উপাদান।
শতকরা৮৫ ভাগ ক্যান্সার হয় তামাক পাতা ব্যবহারের জন্য। শুধু তামাক পাতা বাঅ্যালকোহল পান করার চেয়ে, তামাক পাতা এবং অ্যালকোহল একসঙ্গে ব্যবহার করাক্যান্সার সৃষ্টি হওয়ার জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। মুখে এবং গলায় ক্যান্সারভাইরাস দিয়েও হয়, যার নাম হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস। বংশগত বা রেডিয়েশনেরকারণেও ক্যান্সার হতে পারে। লসিকা গ্রন্থির ক্যান্সার কোনো কারণ ছাড়াই হতেপারে।
ক্যান্সারের সতর্কীকরণ চিহ্ন
* মুখে ঘা হয়, যা সহজে ভালো হয় না এবং বাড়তে থাকে।
* মুখে সবসময় ব্যথা হয়।
* মুখে কোনো চাকা অথবা সাদা, লাল বা গাঢ় রংয়ের আবরণ দেখা দেয়।
* গাল শক্ত হয়ে যায়।
* জিহ্বা নাড়াতে বা পানি খেতে এবং ঢোক গিলতে কষ্ট হয়।
* চোয়াল নাড়াতে ব্যথা হয়। চোয়াল ফুলে যেতে পারে।
* গলায় ব্যথা হতে পারে বা গলায় কিছু আটকে আছে এমন অনুভূত হতে পারে।
* দাঁতে ব্যথা অথবা দাঁত পড়ে যেতে পারে।
* জিহ্বা অথবা মুখের ভেতর যে কোনো জায়গা অবশ হয়ে যেতে পারে।
* গলার স্বর পরিবর্তন হতে পারে।
* গলায় চাকা হতে পারে।
বেশিরভাগ ক্যান্সার ঠোঁট, জিহ্বা অথবা মুখে হয়। মুখের ভেতরে, তালুতে, খাদ্যনালিতে, দাঁতের মাড়ি অথবা দাঁতের গোড়ায়, টনসিল অথবা কণ্ঠনালিতেও ক্যান্সার হতে পারে।
বাংলাদেশে শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ ক্যান্সার রোগী মাথা ওগলার ক্যান্সার নিয়ে আসে এবং বেশিরভাগ রোগী রোগের শেষ পর্যায়ে হাসপাতালেআসে। প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় এবং যথাযথ চিকিৎসায় অনেক ক্যান্সার ভালোহয়ে যায়। বয়স্ক মানুষ বা যাদের এ রোগের লক্ষণ আছে তাদের নিয়মিত চেকআপ করাখুবই দরকার। আমাদের দেশের বড় হাসপাতালগুলোতে এ রোগের রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি এবং অপারেশন নিয়মিত করা হচ্ছে।
সূত্র - যুগান্তর.কম